পোস্টগুলি

ঈগলের গল্প

ছবি
একটা ঈগল পাখির ছানা একদিন উচু মগডাল থেকে পড়ে গেল মাটিতে। মা পাখিটা কিছুতেই ছানাটিকে আর বাসায় তুলতে পারেনা। কাছাকাছি একজন মানুষকে আসতে দেখে, শেষতক মা পাখিটি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে উড়ে চলে গেল। মানুষটি ছিল কৃষক। সে ছোট্ট পাখিটিকে বাসায় ফেরত দেবার ইচ্ছা করে কিন্তু গাছটি শতবর্ষজীবী রেইনট্রি, যেমন মোটা তেমন উচু। তাই আর ছানাটিকে তার মায়ের কাছে দেয়া আর হয়না। অন্যদিকে ছানাটিকে ফেলে যেতেও কৃষকের বিবেকে বাঁধছিল। ছানাটিকে বাসায় আনার পরে বাড়ির অন্য হাঁস-মুরগির সাথে খাবার দেয়া হল। ঈগলের ছানা বড় হতে থাকল হাঁস-মুরগির সাথে। সে জানত বা বুঝত যে, সে নিজে হাঁস অথবা মুরগি। এভাবেই সে বড় হয়ে গেল এক সময়, ঈগলের মত চোখ, নখ, ডানা হল ঠিকই, কিন্তু ওড়ার মত সক্ষমতা আর হলনা। একদিন জঙ্গলের ধারে শেয়াল এলো। হাঁস-মুরগিগুলোকে তাড়া করল। হাঁস দিল পানিতে লাফ আর মুরগিগুলো উড়তে অক্ষম ঈগলের থেকে দ্রুতগামী ছিল বিধায় দৌড়ে পালাল। শেয়ালের হাতে ঈগল ধরা পড়ল। যে ঈগলের হাত থেকে বাঁচতে হাঁস-মুরগিগুলো সবসময় তটস্থ থাকে, সেই ঈগলই আজ মুরগি হয়ে শেয়ালের হাতে ধরা পড়ে শেয়ালের দিন দুয়েকের উদরের শান্তির কারণ ছাড়া কিছুই হতে পারল না। শিক্ষ...

গল্প: লাল জামার স্বপ্ন

ছবি
ঢাকার এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবিদ। মেসে থাকে সে। পরিবারের বাবা-মা আর ক্লাস থ্রীতে পড়ুয়া ছোট বোন গ্রামে থাকে। বাড়ির আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালনা তাই পড়াশুনার পাশাপাশি আবিদ একটা টিউশনি করে। টিউশনিটা ম্যানেজ করে দিয়েছেন হলের রুমমেট বড়ভাই। যাতে কোন প্রকার বদনাম না হয়, পইপই করে তেমনটাই বলে দিয়েছেন। দৃশ্য-১ (হাউজ টিউটর আবিদ ছাত্র পড়াচ্ছে, ছাত্রের মা টিচারের জন্য শুধু এককাপ চা নিয়ে ঢুকতে ঢুকতে) ছাত্রের মা: ছার (স্যার), আপনি তো শাকিরকে সপ্তাহে ৩ দিন পড়ান এতে ওর হয়না। এর পর থেকে ৪ দিন করে পড়াবেন। পারবেন না!! (কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই) আরে আমি জানি পারবেন। স্যার (আবিদ): আন্টি, ৪ দিন আমার জন্য বেশি হয়ে যায়। সেমিস্টার সিস্টেমে পড়াশুনা করি তো, বাধ্যতামূলকভাবে ক্লাস করতে হয়। ছাত্রের মা: ক্লাস করা ছাড়া তো আর আপনার কোন কাজ নাই। দেখেন না ক্লাসে ওর পজিশনটা আরেকটু ওপরে ওঠানো যায় কিনা, তাহলে আপনার দিকটাও ভেবে দেখব। স্যার (আবিদ): আচ্ছা ঠিক আছে শাকিরের জন্য না হয় একটু বেশি কষ্ট করলাম। (আসলে একটু বেশি সম্মানীর আশায়) দৃশ্য-২ (শরীরে অনেকটা জ্বর নিয়ে সেলফোনে আবিদ) স্যার (আবিদ): আন্ট...

বাংলা লেখনীর আদবকেতা

ইদানিং ফেসবুকে ইউনিকোডের সুবাদে বাংলা লেখা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। গেলে কি হবে, সহজতার অসাবধানতায় হোক কিবা অজ্ঞতার কারনে হোক লেখালেখির ক্ষেত্রে যা করা হচ্ছে তা রীতিমত বাংলা ভাষাকে চরম অপমান। মাঝে মাঝে বর্ণের ব্যবহার এত বাজেভাবে করা হয় যে, মন চায় চপেটাঘাত করি। আর দাড়ি-কমা, বিরাম চিহ্ন? সেগুলোর ব্যবহার তো সুদুর মক্কার কথা। সুতরাং আপু-ভাইয়া, আপনাদের কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ করছি, দয়া করে বাংলা বানানটা ততটুকু শিখুন যাতে করে আরেক জনের কাছে অন্তত হাসির পাত্র হতে না হয়। দেখুন, লিখতে গেলে ভুল কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরও হয়,ভুল আপনারও হবে, আমার এই লেখায়ও যে ভুল হয়নি তা নিশ্চিত বলতে পারছিনা। হোক, তবে ওই যে বললাম হাসির পাত্র হবেন না। মাতৃভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করার মত তৃপ্তি অন্য কোন ভাষাতেই নেই, সুতরাং মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সম্মান প্রদর্শনপূর্বক শুরু হোক লেখার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশের যাত্রা।

সময় এসেছে ক্রিকেটীয় পরিবর্তনের

ছবি
বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের অনুপ্রেরণামূলক গানঃ “আমরা করব জয় , আমরা করব জয় , আমরা করব জয় নিশ্চয়। আহা বুকের গভীরে, আছে প্রত্যয়” আচ্ছা, এটাতো বাচ্চাদের গান। ছোট ছোট বাচ্চারা সমবেত কন্ঠে গাইবে, তারা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে ভাল কিছু করার প্রত্যয়ে উদ্দিপ্ত হবে, সে অনুযায়ী এখন কাজ করবে, তাই নয় কী? তাহলে প্রশ্ন হল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট টিম শুধু প্রত্যয় নিয়েই ক্ষান্ত থাকবে? কেন থাকবে? সামনে এগুনোর বা বড় শিরোপা লাভের আকাঙ্খা নেই? ক্রিকেটারদের অনুশীলন, পারিশ্রমিক, সুযোগ-সুবিধা, বোনাস ঘোষণা কোনকিছুতেই তো কমতি নেই, সমর্থনের অভাবও নেই। তারা তো এখন আর সেই বিশ বছর আগের সময়টাতে নেই, বড় হয়েছেন, হাটি হাটি পা পা করে অনেকদূর এগিয়েছেন। তাহলে এখনো কেন বাচ্চাদের মত করে অনুপ্রেরনামূলক গান গাইতে হবে? সময় এসেছে পরিবর্তনের, বাংলাদেশ যেমন সল্পোন্নত দেশের তকমা থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে এসেছে, তেমনি ক্রিকেটেও ভবিষ্যতের প্রত্যয় গ্রহণ না করে আজ এবং এখনি কিছু করার দৃপ্ত সংকল্প করতে হবে। নতুন গান বাঁধতে হবে। দরকার হলে মাঠে নামার আগে দৃঢ় শপথবাক্য পাঠ করতে হবে যাতে মাঠে ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চটুকু দিতে কার্পণ্য না...