ঈগলের গল্প
একটা ঈগল পাখির ছানা একদিন উচু মগডাল থেকে পড়ে গেল মাটিতে। মা পাখিটা কিছুতেই ছানাটিকে আর বাসায় তুলতে পারেনা। কাছাকাছি একজন মানুষকে আসতে দেখে, শেষতক মা পাখিটি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে উড়ে চলে গেল।
মানুষটি ছিল কৃষক। সে ছোট্ট পাখিটিকে বাসায় ফেরত দেবার ইচ্ছা করে কিন্তু গাছটি শতবর্ষজীবী রেইনট্রি, যেমন মোটা তেমন উচু। তাই আর ছানাটিকে তার মায়ের কাছে দেয়া আর হয়না। অন্যদিকে ছানাটিকে ফেলে যেতেও কৃষকের বিবেকে বাঁধছিল।
ছানাটিকে বাসায় আনার পরে বাড়ির অন্য হাঁস-মুরগির সাথে খাবার দেয়া হল। ঈগলের ছানা বড় হতে থাকল হাঁস-মুরগির সাথে। সে জানত বা বুঝত যে, সে নিজে হাঁস অথবা মুরগি। এভাবেই সে বড় হয়ে গেল এক সময়, ঈগলের মত চোখ, নখ, ডানা হল ঠিকই, কিন্তু ওড়ার মত সক্ষমতা আর হলনা।
একদিন জঙ্গলের ধারে শেয়াল এলো। হাঁস-মুরগিগুলোকে তাড়া করল। হাঁস দিল পানিতে লাফ আর মুরগিগুলো উড়তে অক্ষম ঈগলের থেকে দ্রুতগামী ছিল বিধায় দৌড়ে পালাল। শেয়ালের হাতে ঈগল ধরা পড়ল।
যে ঈগলের হাত থেকে বাঁচতে হাঁস-মুরগিগুলো সবসময় তটস্থ থাকে, সেই ঈগলই আজ মুরগি হয়ে শেয়ালের হাতে ধরা পড়ে শেয়ালের দিন দুয়েকের উদরের শান্তির কারণ ছাড়া কিছুই হতে পারল না।
শিক্ষনীয়ঃ
যার ভেতরকার যে ক্ষমতা আছে, তা নিজেকে জানতে হবে। সময়মত, সঠিক লোকের হাতে সঠিক পরিবেশে প্রশিক্ষণ না পেলে সে নিজেকে আবিষ্কারই করতে পারবেনা, কাজে লাগানো তো দূরের কথা। নিজে যদি নিজের ক্ষমতা বুঝতে না পারে অন্যরা সাহায্য করা উচিৎ, এজন্যই মেন্টরের প্রয়োজন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন